রত্নার স্বপ্ন পুরণে পাশে দাঁড়ালো ‘ফেয়ার’
বাবা-মায়ের অভাব অনটনের সংসার। বিয়ে হলো পাবনাতে। বিয়ে হওয়ার পর স্বপ্ন ছিলো স্বামীকে নিয়ে সুখের সংসার করা। আসলে এই স্বপ্ন সব নারীরই। স্বামীর সংসারে রত্নার দিন ভালই কাটছিল। এরই মধ্যে তাদের সুখের সংসারে ঘর আলোকিত করে এলো তাদের এক কন্যা সন্তান। তাকে নিয়ে সুখের সংসার তাদের। হঠাৎ একদিন সন্ধ্যায় তার স্বামীর বুকে ব্যথা অনুভব হয়। বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করায় এবং একটু ভালো অনুভব করে হাসপাতালে আর নিয়ে যায়নি। কিন্তু রাত যত বাড়ে বুকের ব্যথা আবার শুরু হয় এবং খানিক পরে তার নিথর দেহ পড়ে থাকে বিছানায়। আর এইভাবে মাত্র ২৬ বছর বয়সে ১০ বছরের সংসার জীবনের ইতি টেনে বিধাব হয়ে সঙ্গে ৭ বছর বয়সী একমাত্র কন্যা সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে ফিরে আসে রত্না তার বাবার বাড়িতে।
রত্বার জীবনে শুরু হয় আর এক নতুন যুদ্ধ। বাবার অভাবে সংসারে রত্নারা একটা বাড়তি বোঝা হয়ে দাঁড়াই। কিভাবে হবে তাদের দু’মুঠো অন্নের যোগাড়। সে কোন রকমে বেঁচে থাকতে চাই সন্তানকে নিয়ে। তাই কিছুদিন পর থেকে দিনমজুর হিসেবে কাজ শুরু করে রত্না রানী দাস। সেখানেও বেতন বৈষম্য, পুরুষদের থেকে নারী কর্মিদের মুজুরী কম। এভাবে খেয়ে নাখেয়ে নানা টানাপড়নের মধ্য দিয়ে চলে মা-মেয়ের সংসার। রত্নার মেয়ে এখন ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার স্বপ্ন মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে নিজের পায়ে দাঁড় করানো যাতে তার মতো বিপদে তার মেয়েকে আর পড়তে না হয়।
রত্নার এই স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে এসেছে ফেয়ার। অর্থের অভাবে মেয়ের লেখাপড়া যাতে বন্ধ না হয় তার জন্য ফেয়ার রত্নাকে প্রদান করেছে একজোড়া গাড়ল। ফেয়ার আজ বাংলাদেশ এজিও ফাউন্ডেশন এর সহায়তায় রত্নাসহ মোট ৫ টি অস্বচ্ছ দলিত পরিবারকে একজোড়া করে মোট ১০ টি গাড়ল প্রদান করে। রত্না বাদে অন্যান্যরা হলেন অঞ্জনা রাণী, সুখি রাণী দাস, সিতারা রানী ও সবিতা রানী।
এখানে উল্লেখ্য যে, ফেয়ার বিগত ২০ বছর যাবত দলিত জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নানাবিধ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে। এরই ধারাবাহিতকায় আলামপুর দাসপাড়ায় ২১ টি পরিবারকে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা এবং ৫ টি পরিবারকে গাড়ল প্রদানের কর্মসূচি গ্রহণ করে। ইতোমধ্যে ২১ টি পরিবারকে ১১ টি পায়খানা তৈরি করে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ফেয়ার এর পক্ষ থেকে প্রকল্প সমন্বয়কারী কেএম হারিসুল আলম জনি ও সাগার ইসলাম উপস্থিত থেকে পায়খানা হস্তান্তরসহ গাড়ল প্রদান করেন।